যুবদল নেতার নামে চেক জালিয়াতি’অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ

গোলাম কিবরিয়া বরগুনা:বরগুনার বামনা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক রিয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে চেক জালিয়াতির মাধ্যম্যে টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার বামনা উপজেলা সোনালী ব্যাংক, বামনা শাখা থেকে সকাল সাড়ে এগারটার দিকে এ যুবদল নেতা রিয়াদ চৌধুরী চেক জালিয়াতি চুরির মাধ্যমে একাউন্ট থেকে ৬৫ (পয়’ষট্রি) হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ঘটিছেন।পরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার সময় ব্যাংক ম্যানেজার ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে এ চক্রটির চিহ্নিত করে শনাক্ত করে। সিসি ফুটেছে দেখা যায়, যুবদল নেতা রিয়াজ চৌধুরীকে টাকা উত্তোলন করিতে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে ও একটি ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে জানা যায়,রিয়াদ চৌধুরী জালিয়াতি করে আত্মসাৎ করা টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে পেরেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৬৭) তার ছেলে আবু সালেহ বাচ্চু বিজিবিতে কর্মরত।পরিবারে প্রতি মাসে টাকা পাঠাতে বামনা সোনালী ব্যাংক শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয় যার একাউন্ট নম্বর ১৬৪৮২। ব্যাংকের চেক বহিতে ছেলে আবু সালেহ স্বাক্ষর করে রেখে যায় যাতে প্রতিমাসে তার বাবা দেলোয়ার হোসেন ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারে। এরপরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে এলে বৃদ্ধ দেলোয়ার হোসেন চেক লিখতে সহযোগীতা চাইলে ব্যাংকের আনসার গার্ড ইমরান অভিযুক্ত এই রিয়াদ চৌধুরীকে বললে সহযোগিতার উল্টো রিয়াদ চৌধুরী বৃদ্ধ বাবা দেলোয়ারের চোখ ফাকি দিয়ে স্বাক্ষরিত তিনটি চেক থেকে একটি চেকের পাতা চুরি করে পয়ষট্টি হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যায়।

এরপর বৃহস্পতিবার দুপুর একাউন্টধারী আবু সালেহ বাচ্চুর মোবাইলে টাকা উত্তোলন করেছেন মর্মে একটি মোবাইল এসএমএস নোটিফিকেশন দেখতে পেয়ে বাবা দেলোযার হোসেনকে ফোন করে বললে দেলোয়ার হোসেন তাৎক্ষনিক ব্যাংকের উক্ত শাখার ম্যানেজারের সহায়তায় ত্রিশ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে বাকি ৩৫ হাজার টাকাও উদ্ধার করে বাবা দেলোয়ার হোসেনকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

জালিয়াতির বিষয়ে সোনালী ব্যাংক, বামনা শাখার ম্যানেজার ( প্রিন্সিপাল অফিসার) মো: কায়সার হোসেন জানান,ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন নামের বৃদ্ধ তার ছেলের একাউন্টের টাকা উত্তোলন করেছে মর্মে মৌখিক অভিযোগে সিসিটিভি ফুটেজ ও তদন্ত করে তিন সদস্যর একটি জালিয়াতি চক্র চিহ্নিত করেছি।পরে আমি বামনা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ রানা ভাইয়ের সহযোগিতায় জালিয়াতি করে আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
জালিয়াতি করে আত্মসাৎ করা টাকার বিষয়ে অভিযুক্ত রিয়াদ চৌধুরীর সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বরগুনা জেলা যুবদলের সভাপতি মো: জাহিদ হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, বামনা উপজেলা যুবদল নেতা রিয়াদ চৌধুরীর জালিয়াতির এহেন কর্মকান্ডের কথা আমরা জেনেছি। সঠিক ঘটনা উদ্ঘাটনের পরে দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দোষি প্রমানিত হলে যুবদল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে।

বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: হারুন অর রশীদ হাওলাদার বলেন, যুবদল নেতা রিয়াদ চৌধুরী বিরুদ্ধে আমার থানার অনেক এসআই, এএসআই, কনস্টাবলগণ মৌখিক অভিযোগ করেছেন। পুলিশের নামে রিয়াদ চৌধুরী প্রায়ই সময় টাকা চাঁদাবাজি করে থাকেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও বামনা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ রানা বলেন,বামনা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদ চৌধুরী জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ব্যাংক ম্যানেজার কায়সার হোসেন আমাকে মুঠো ফোনে অবহিত করে,তিনি আমাকে ব্যাংকে চায়ের দাওয়াত দিলে আমি, যুবদল আহবায়ক খোরশেদ আলম দিপু, বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রায়হান নাজির ধলু, যুগ্ম আহবায়ক আরিফুর রহমান শিমুলসহ আমি সোনালি ব্যাংকে গিয়ে ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেনের কান্নার আকুতি দেখে সুকৌশলে টাকা উদ্ধার করেছি। পরে তিনি ব্যাংক ম্যানেজারকে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।