উখিয়াতে বিভাগের নাকের ডগায় পাহাড় কর্তন! মাটি চাপায় ৩ শ্রমিক নিহত!

মুসলিম উদ্দিন:  কক্সবাজার জেলার উখিয়ার মুহুরিপাড়ায় পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপায় তিন রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ১৩/১৫জন রোহিঙ্গা শ্রমিক দিয়ে বিশাল পাহাড় কাটার মহা উৎসব চলছিলো উখিয়ার মুহুরিপাড়ার মৃত ভুটকা আলীর পুত্র নেছার আহমেদ (৪৫) ও আবুল বলির ছেলে ভুলু সওদাগর ও নুর মোহাম্মদ বলি ডাম্পার যোগে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও বনবিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়েনি তবে জানা গেছে উখিয়ার একটি প্রভাবশালী চক্রও এই পাহাড় কাটায় জড়িত রয়েছে।  প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিদিনের মত রোহিঙ্গা শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটছিলো। তার মধ্যে বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে মাটি চাপায় পড়ে ৩জন রোহিঙ্গা শ্রমিক নিহত হয়েছে।
তার মধ্যে নিহত ব্যক্তিরা হলেন, উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প- ১ইষ্টের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা আব্দুল মোতালেবের ছেলে জাহিদ হোসেন (১৯) ও একই ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ওয়ারেসের ছেলে ছৈয়দ আকবর (২১) ও উখিয়ার ১৭ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাব ব্লক- এ/১০৭ সুলতান আহমেদের ছেলে নুর কবির (৩০)।
গতকাল দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোছাইন সজীব। এ সময় তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। দেখেছি বিশাল পাহাড় কাটা হয়েছে। পাহাড় কাটার সময় ৩জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এবং যারা এই পাহাড় কাটায় ব্যস্থ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবং এবিষয়টি আরো নিশ্চিত করেছেন, উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের মুহুরিপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটতে গিয়ে ৩ জন রোহিঙ্গা মাটি চাপা পড়ার খবর পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার সাথে সাথে উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে রোহিঙ্গাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এবং লাশ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং উক্ত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান। উখিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভেল ডিফেন্স এর স্টেশন ইনচার্জ এমদাদুল হক জানান, পাহাড়ের মাটি চাপা পড়া ৩জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় মেম্বার আবদুল হক জানান, এখানে দীর্ঘ দিন ধরে প্রায় ১৩/১৪জন রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করে আসছিলো। তারা নেছারের পাহাড় কাটছিলো এ সময় পাহাড় চাপায় এমন নির্মম ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, স্থানীয় অনার্স তৃতীয় বর্ষ পড়ুয়া এক ছাত্র বলেন, প্রতিদিন রাতে ফরেস্ট লোকের নেতৃত্বে এখানে মাটি গুলো কাটা হচ্ছিলো। এবং রাতে মাটিকাটার গাড়ি চলাচলের আমরা ঘুমাতে পারছিলাম না। এই পাহাড়টি উখিয়া রেঞ্জ অফিসের সামনে তার পরেও বন বিভাগ দেখেও না দেখার বান করেছিলো। বন বিভাগের তৎপরতা থাকলে এমন নির্মম ঘটনা ঘটতো না।
বন কর্মকর্তা (এসিএফ) আনিসুর রহমান খোলা কাগজকে জানান, এই পাহাড় কাটায় যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, পাহাড় ধ্বংসে রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনায় আবদুল মান্নান প্রকাশ টনা ও নেছার আহমদ, বুলু সওদাগর, নুরু মাঝি, মোহাম্মদ আলমসহ অন্যন্য যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।